Header Ads

Header ADS

শেয়ারবাজারে মুদ্রানীতির প্রভাব


মুদ্রানীতির টান ব্যাংকের টাকায় তাৎক্ষণিকভাবে লাগুক বা না লাগুক, শেয়ারবাজারের সূচকে ঠিকই টান লাগিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি ঘোষণার পরদিনই বাজারে সূচক কমেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৯ পয়েন্ট কমেছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি কমেছে ৮৯ পয়েন্ট।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মুদ্রানীতিতে কাগুজে হিসাবে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহ বাড়ানো হয়েছে। ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে এই হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, গত ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ১ শতাংশে। এরই নেতিবাচক প্রভাবে গতকাল মঙ্গলবার বাজারে দরপতন ঘটেছে। তবে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কেউ কেউ এটিকে ‘অযৌক্তিক’ প্রতিক্রিয়া হিসেবেও অভিহিত করেছেন।
এদিকে বাজার পতনের ধারায় থাকায় কোনো কোনো কোম্পানির লভ্যাংশ, আয় বৃদ্ধির খবর সত্ত্বেও দাম কমেছে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিকম খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোনের বছর শেষের লভ্যাংশ ও আয়ের খবর প্রকাশ হয়েছে গতকাল। তাতে কোম্পানিটি বছর শেষে ১০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগে ১০৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানি, যা এরই মধ্যে শেয়ারধারীদের মধ্যে বিতরণও করা হয়েছে। ফলে বছর শেষে কোম্পানিটির মোট লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়ায় ২০৫ শতাংশে। আগের বছরের চেয়ে গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএসও বেড়েছে। তারপরও গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৫ টাকা ৪০ পয়সা বা প্রায় ১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫০৫ টাকায়।
জানতে চাইলে শীর্ষস্থানীয় একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, মুদ্রানীতি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একধরনের সংশয় তৈরি হয়েছে। এ কারণে কিছু বিষয়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে বাজারে। এমনটি ঘটে যখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি থাকে তখন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ হেলাল বলেন, মুদ্রানীতিতে শেয়ারবাজারের জন্য নেতিবাচক তেমন কিছুই নেই। যার কারণে বাজারে পতন ঘটতে পারে। মুদ্রাবাজারে আমানতের সুদ হার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। ব্যাংকে আমানতের সুদ হার বাড়লে তাতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কিছুটা কমতে পারে। এ আশঙ্কা থেকে বিনিয়োগকারীদের অনেকে সতর্ক অবস্থানে থাকায় কিছুটা পতন ঘটেছে বাজারে।
শেয়ারবাজারের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের গতকালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সূচক কমলেও আগের দিনের চেয়ে গতকাল বাজারের মূল্য আয় অনুপাত বেড়েছে। সোমবারের চেয়ে তা প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৭৯-এ। এদিন ঢাকার বাজারে লেনদেনে আধিপত্য ছিল ব্যাংক ও প্রকৌশল খাতের। বাজারের মোট লেনদেনের ৩২ শতাংশই ছিল এই দুই খাতের দখলে।
এদিকে দাম কমলেও গতকাল ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে গ্রামীণফোন। এদিন ডিএসইতে কোম্পানিটির ২৯ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়। ঢাকার বাজারে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল দিন শেষে কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১২৮ পয়েন্টে। ডিএসইতে এদিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৯৯ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১৪ কোটি টাকা কম। চট্টগ্রামের বাজারে গতকাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩২ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১১ কোটি টাকা বেশি।

No comments

Thanks for comment

Powered by Blogger.