Header Ads

Header ADS

জবিতে মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী ছাত্র সমাবেশ ও কনসার্ট

আব্দুল্লাহ ফাহাদ জাকির (জবি) : সমাজ হতে মাদক ও সন্ত্রাসের দুরীভুত ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ ০৫ মার্চ সোমবার, সকাল ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), লালবাগ জোন-এর যৌথ উদ্যোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিজ্ঞান ভবন চত্বরে ‘মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী ছাত্র সমাবেশ ও কনসার্ট’ অনুষ্ঠিত হয়।  কোরআন তেলাওয়াত  ও অন্যান্য গ্রন্থ পাঠ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের পরিবেশনায় জাতীয় সঙ্গীত ও উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান আরম্ভ হয়।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, “মাদক সামাজিক সমস্যা। আর সামাজিকভাবেই এই সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে। জনগণকে একসাথে নিয়ে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমেই সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে হবে। পারিবারিক মূল্যবোধ একটি মানুষের ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহন করে। মাদক সমস্যা নিরাময়ে পারিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে।” এ সময় তিনি বলেন, “বাংলাদেশে কোন পুলিশের সদস্য মাদকের  অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে



মহা-পরিদর্শক আরো বলেন, “একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে যায় পরিবারের একটি মাত্র সদস্যের মাদকের নেশায়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মাদক নির্মূলে নেতৃত্ব দিতে পারে। জঙ্গিবাদ নির্মূলে যেভাবে আমরা এগিয়েছি মাদক নির্মূলেও সবার সহযোগিতা পেলে সফল হব।” এসময় তিনি শহীদ পরিবারের সন্তান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল-এর উপর হমালার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশে আমাদের অন্যতম জাতীয় শত্রু  মাদক, আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাস। এগুলো নির্মূলে আমাদের দ্বিতীয় বারের মত মুক্তিযুদ্ধের মতো আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সমাজের সকলকে এসকল ব্যাধি নির্মূলে এগিয়ে আসতে হবে।”



তিনি বলেন, “জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের দেশকে ধ্বংস করার জন্য এসকল ধ্বংসাত্মক ব্যাধি সমাজে প্রবেশ করাচ্ছে। আর এগুলো হ্রাস করার ক্ষেত্রে প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে পরিবারের, তারপর সমাজের, আর শেষের দিকে প্রশাসনের। তাছাড়া ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ সন্তানদের মাঝে জাগ্রত করতে হবে।” স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনও জঙ্গিবাদ সৃষ্টিতে অগ্রগামী। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের কার্যক্রম প্রশংসনীয় এবং বহিবিশ্বের জন্য অনুকরণীয়। যে জাতি রক্ত দিয়ে ভাষা ও দেশ অর্জন করতে পেরেছে, সে জাতি অবশ্যই মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে সব করতে পারবে।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এধরনের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সভাপতির বক্তেব্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, “শুধুমাত্র পুলিশ দিয়ে মাদক ও সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ৭ই মার্চে যেমন বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতার জন্য ঘরে ঘরে দুর্গ তুলতে বলেছিলেন, তেমনি সমাজ হতে মাদক ও সন্ত্রাসের বিষাক্ত ছোবল হতে দেশকে রক্ষার্থে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। নতুন প্রজন্মদের মাঝে যাতে ধর্মীয় বিভ্রান্তি প্রবেশ করাতে না পারে সেজন্য শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করতে হবে।”

এছাড়াও ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ লালবাগ জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার-এর সঞ্চালনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ. কে. এ. মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী, প্রক্টর অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় উপাচার্য বাংলাদেশ পুলিশের মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) ও মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে এবং আইজিপি উপাচার্যকে ক্রেস্ট প্রদান করেন।

সমাবেশ শেষে অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ শুরু হয়। এতে দেশের প্রখ্যাত ‘জলের গান’ ব্যান্ড দলের পরিবেশনায় কনসার্ট পরিবেশিত হয়। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গান পরিবেশিত হয়। এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কে. এল. জুবিল স্কুলের শিক্ষার্থীসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Thanks for comment

Powered by Blogger.